বাঙ্গালী
Friday 26th of April 2024
0
نفر 0

ইমাম হোসাইন (আ.)-এর পবিত্র মাথা কোথায় দাফন করা হয়?

ইমাম হোসাইন (আ.) এবং অন্যান্য শহীদের মাথা কোথায় দাফন করা হয় তা নিয়ে শিয়া ও সুন্নিদের ইতিহাস গ্রন্থে এবং শিয়াদের হাদীস গ্রন্থে প্রচুর মতানৈক্য পরিলক্ষিত হয়। তবে এ ব্যাপারে যেসব মতামত উল্লেখ করা হয়েছে তা যথেষ্ট বিশ্লেষণের দাবি রাখে। বর্তমানে শিয়াদের কাছে গ্রহণযোগ্য মত হলো ইমাম হোসাইন (আ.)-এর শাহাদাতের কয়েকদিন পরে তাঁর পবিত্র মাথা দেহের সাথে সংযুক্ত করে কারবালার মাটিতে দাফন করা হয়। বিস্তারিত জানার জন্য বিভিন্ন মত নিচে উল্লেখ করা হলো : এক. কারবালা
ইমাম হোসাইন (আ.)-এর পবিত্র মাথা কোথায় দাফন করা হয়?

ইমাম হোসাইন (আ.) এবং অন্যান্য শহীদের মাথা কোথায় দাফন করা হয় তা নিয়ে শিয়া ও সুন্নিদের ইতিহাস গ্রন্থে এবং শিয়াদের হাদীস গ্রন্থে প্রচুর মতানৈক্য পরিলক্ষিত হয়। তবে এ ব্যাপারে যেসব মতামত উল্লেখ করা হয়েছে তা যথেষ্ট বিশ্লেষণের দাবি রাখে। বর্তমানে শিয়াদের কাছে গ্রহণযোগ্য মত হলো ইমাম হোসাইন (আ.)-এর শাহাদাতের কয়েকদিন পরে তাঁর পবিত্র মাথা দেহের সাথে সংযুক্ত করে কারবালার মাটিতে দাফন করা হয়। বিস্তারিত জানার জন্য বিভিন্ন মত নিচে উল্লেখ করা হলো :

এক. কারবালা

শিয়া আলেমদের মধ্যে এ মতটি হলো সবচেয়ে বেশি প্রসিদ্ধ। আল্লামা মাজলিসি (র.) এ মতের প্রসিদ্ধির কথা ব্যক্ত করেছেন। ১

সাদুক (র.) হযরত আলী (আ.)-এর মেয়ে এবং ইমাম হোসাইন (আ.)-এর বোন ফাতেমা থেকে বর্ণিত একটি হাদীসে উল্লেখ করেন, কারবালায় দেহ মোবারকের সাথে মাথা সংযুক্ত করা হয়েছিল। ২ তবে মাথা সংযুক্ত করার পদ্ধতি নিয়ে বিভিন্ন রকম দৃষ্টিভঙ্গি ব্যক্ত করা হয়েছে।

সাইয়্যেদ বিন তাউসসহ কেউ কেউ এটিকে একটি অলৌকিক বিষয় হিসেবে মনে করেন এবং বলেন, আল্লাহ তা‘আলা স্বীয় ক্ষমতাবলে অলৌকিকভাবে এ কাজটি করেন। আর এ ব্যাপারে কোন প্রশ্ন করা থেকে বিরত থাকতে বলা হয়েছে। ৩

আবার কেউ কেউ বলেন, ইমাম সাজ্জাদ (আ.) সিরিয়া থেকে ফেরার সময় চল্লিশতম দিনে৪ অথবা অন্য কোন এক দিনে ইমামের পবিত্র মাথা কারবালায় তাঁর দেহের পাশে দাফন করেন।৫

কিন্তু ইমামের মাথা একেবারে তাঁর দেহ মোবারকের সাথে সংযুক্ত করে নাকি তাঁর দেহের পাশে দাফন করা হয়েছে এ ব্যাপারে সুস্পষ্ট কোন বর্ণনা নেই। এছাড়া সাইয়্যেদ ইবনে তাউসও এ ব্যাপারে বেশি প্রশ্ন করা থেকে বিরত থাকতে বলেছেন। ৬

একদল বলেন, ইমাম হোসাইন (আ.)-এর পবিত্র মাথা ইয়াযীদের আমলে তিন দিন দামেশকের প্রধান দরজায় ঝুলিয়ে রাখা হয়। অতঃপর সেখান থেকে নামিয়ে সরকারি মূল্যবান বস্তুর সংরক্ষণাগারে রাখা হয়। উমাইয়া শাসক সুলায়মান বিন আবদুল মালেকের শাসনকাল পর্যন্ত ইমামের পবিত্র মাথা সেখানেই থাকে। এরপর সুলায়মান ঐ মাথাকে কাফন পরিয়ে দামেশকে মুসলমানদের গোরস্তানে দাফন করে। অতঃপর সুলায়মানের উত্তরাধিকারী উমর বিন আবদুল আজীজ (খেলাফত : ৯৯-১০১ হি.) গোরস্তান থেকে ঐ পবিত্র মাথাকে বের করে নিয়ে আসেন এবং সেটাকে কী করেন তা কারো জানা নেই! কিন্তু তিনি যেহেতু শরীয়তের বাহ্যিক আমলের প্রতি অনুগত ছিলেন সেহেতু যথাসম্ভব ঐ পবিত্র মাথাকে কারবালা পাঠিয়েছিলেন। ৭

পরিশেষে বলতে চাই, কোন কোন সুন্নি মনীষী, যেমন, শাব্লানজী এবং সিব্ত ইবনে জাওজীও এক রকম স্বীকার করেছেন যে, পবিত্র মাথা কারবালায় দাফন করা হয়েছে। ৮

দুই. নাজাফে হযরত আলী (আ.)-এর মাযারের পাশে

আল্লামা মাজলিসি (র.)-এর বক্তব্য থেকে এবং কতগুলো হাদীস বিশ্লেষণ করে পাওয়া যায় যে, ইমামের মাথা নাজাফে হযরত আলী (আ.)-এর মাযারের পাশে দাফন করা হয়েছে। ৯ কিছু কিছু হাদীসে এসেছে, ইমাম জাফর সাদিক (আ.) স্বীয় সন্তান ইসমাইলকে সাথে নিয়ে নাজাফে ইমাম আলী (আ.)-এর যিয়ারত করে নামায পড়ার পর ইমাম হোসাইন (আ.)-কে উদ্দেশ্য করে সালাম দিতেন। অতএব, এসব হাদীস থেকে সুস্পষ্টভাবে বোঝা যায় যে, ইমাম জাফর সাদিক (আ.)-এর সময়কাল পর্যন্ত ইমাম হোসাইন (আ.)-এর পবিত্র মাথা নাজাফেই ছিল। ১০

অন্যান্য হাদীসও এ মতটিকে সমর্থন করে। এমনকি শিয়াদের গ্রন্থসমূহে ইমাম আলী (আ.)-এর মাযারের পাশে ইমাম হোসাইন (আ.)-এর পবিত্র মাথা যিয়ারত করার জন্য দুআ’ও উল্লেখ করা হয়েছে। ১১

ইমামের পবিত্র মাথা নাজাফে স্থানান্তরিত করার ব্যাপারে ইমাম জাফর সাদিক (আ.) বলেন : ‘আহলে বাইত (আ.)-এর একজন ভক্ত সিরিয়ায় ইমামের পবিত্র মাথা চুরি করে ইমাম আলী (আ.)-এর মাযারের পাশে নিয়ে আসে। ’১২ অবশ্য এ মতের ব্যাপারে একটি ত্রুটি পরিলক্ষিত হয়। আর তা হলো, ইমাম জাফর সাদিক (আ.)-এর সময়কাল পর্যন্ত ইমাম আলী (আ.)-এর মাযার সবার কাছে পরিচিত ছিল না।

অন্য এক হাদীসে এসেছে, ইমামের পবিত্র মাথা দামেশ্কে কিছু দিন রাখার পর কুফায় ইবনে যিয়াদের কাছে পাঠিয়ে দেয়া হয়। সে জনগণের বিদ্রোহের ভয়ে এ নির্দেশ দেয় যে, ইমামের পবিত্র মাথা যেন কুফা থেকে বের করে নাজাফে হযরত আলী (আ.)-এর মাযারের পাশে দাফন করা হয়। ১৩ পূর্ববর্তী মতের ব্যাপারে যে ত্রুটি উল্লেখ করা হয়েছে এখানেও সে ত্রুটি প্রযোজ্য।

তিন. কুফা

সাব্ত ইবনে জাওজী এ মতের প্রবক্তা। তিনি বলেন : ‘আমর বিন হারিস মাখজুমী, ইবনে যিয়াদের কাছ থেকে ইমামের পবিত্র মাথা নেয় এবং গোসল দেয়ার পর কাফন পরিয়ে ও সুগন্ধি মাখিয়ে স্বীয় বাড়িতে দাফন করে। ’১৪

চার. মদীনা

‘তাবাকাতে কুবরা’র লেখক ইবনে সা’দ এ মতটি গ্রহণ করেছেন। তিনি বলেন : ‘ইয়াযীদ ইমামের মাথাকে মদীনার শাসক আমর বিন সাঈদের জন্য পাঠায়। আমর ঐ পবিত্র মাথাটিকে কাফন দেওয়ার পর বাকী গোরস্তানে হযরত ফাতেমা (সা.)-এর মাযারের পাশে দাফন করে। ১৫

এ মতটিকে আহলে সুন্নতের কতিপয় পণ্ডিত ব্যক্তি (যেমন খাওয়ারেজমী ‘মাকতালুল হোসাইন (আ.)’ গ্রন্থে এবং ইবনে এমাদ হাম্বালী ‘শুজুরাতুত যাহাব’ গ্রন্থে) গ্রহণ করেছেন। ১৬

এ মতের ব্যাপারে সবচেয়ে বড় ত্রুটি হলো, হযরত ফাতেমা যাহরা (আ.)-এর কবর ছিল অজ্ঞাত। অতএব, কিভাবে সম্ভব যে, তাঁর কবরের পাশে দাফন করা হতে পারে।

পাঁচ. সিরিয়া

সম্ভবত বলা যেতে পারে, অধিকাংশ সুন্নি আলেমের মতে, ইমামের পবিত্র মাথা সিরিয়ায় দাফন করা হয়েছে। এ মতে বিশ্বাসীদের মধ্যেও মতানৈক্য পরিলক্ষিত হয়। সেসব মতামত নিচে উল্লেখ করা হলো :

ক. ফারাদীস শহরের প্রধান গেটের পাশে দাফন করা হয়। পরবর্তীকালে সেখানে ‘মাসজিদুর রাস’ তৈরি করা হয়।

খ. উমাইয়া জামে মসজিদের পাশে একটি বাগানে দাফন করা হয়।

গ. দারুল ইমারায় দাফন করা হয়।

ঘ. দামেশ্কের একটি গোরস্তানে দাফন করা হয়।

ঙ. তুমা শহরের দরজার পাশে দাফন করা হয়। ১৭

ছয়. রিক্কা

ফোরাত নদীর তীরে একটি শহরের নাম হলো রিক্কা। কথিত আছে, ইয়াযীদ ইমাম হোসাইন (আ.)-এর মাথা আবু মুহিতের বংশধরের কাছে পাঠায়। (আবু মুহিতের বংশধর উসমানের আত্মীয় ছিল এবং ঐ সময় রিক্কা শহরে বাস করত)। তারা ইমামের পবিত্র মাথা একটি বাড়িতে দাফন করে যা পরবর্তীকালে মসজিদে রূপান্তরিত হয়। ১৮

সাত. মিশর (কায়রো)

বর্ণিত হয়েছে, ফাতেমী খলীফাগণ যারা চতুর্থ শতাব্দীর মাঝামাঝি থেকে শুরু করে সপ্তম শতাব্দীর মাঝামাঝি পর্যন্ত মিশরে রাজত্ব করেন এবং শিয়া ইসমাঈলী মাযহাবের অনুসারী ছিল তারা ইমাম হোসাইন (আ.)-এর পবিত্র মাথা সিরিয়ার ফারাদীস শহর থেকে আসকালান, অতঃপর কায়রোতে নিয়ে যায়। এরপর সেখানে ৫০০ বছর পর ইমাম হোসাইন (আ.)-এর মুকুট নামে একটি মাযার তৈরি করে। ১৯

মাকরীযী মনে করেন, ৫৪৮ সালে ইমাম হোসাইন (আ.)-এর মাথা আসকালান থেকে কায়রোতে স্থানান্তরিত হয়। তিনি বলেন : ‘আসকালান থেকে পবিত্র মাথা বের করার সময় দেখা যাচ্ছিল যে, তার রক্ত টাটকা এবং এখনো শুকায়নি। আর মেশকের মতো একটি সুগন্ধি ইমামের পবিত্র মাথা থেকে বের হচ্ছিল। ’২০ আল্লামা সাইয়্যেদ মুহসিন আমিন আমেলী (গত শতাব্দীর প্রসিদ্ধ শিয়া আলেম) আসকালান থেকে মিশরে ইমাম হোসাইন (আ.)-এর মাথা স্থানান্তরিত হওয়ার ব্যাপারে বলেন : ‘মাথার সমাধিস্থলে একটি বড় মাযার তৈরি করা হয়েছে। আর তার পাশে একটি বড় মসজিদও তৈরি করা হয়েছে। ১৩২১ হিজরিতে ঐ জায়গা আমি যিয়ারত করি। আর বহু নারী-পুরুষকে সেখানে যিয়ারত করতে ও কান্নাকাটি করতে দেখতে পাই। ’ তিনি আরো বলেন : ‘একটি মাথা আসকালান থেকে মিশরে স্থানান্তরিত হওয়ার ব্যাপারে কোন সন্দেহ নেই। তবে ঐ মাথাটি ইমাম হোসাইন (আ.)-এর নাকি অন্য কোন ব্যক্তির এ ব্যাপারে যথেষ্ট সন্দেহ রয়েছে। ’২১

আল্লামা মাজলিসী (র.) মিশরের একটি দলের বরাত দিয়ে সেখানে ‘মাশহাদুল কারীম’ নামে একটি বড় মাযার থাকার প্রতি ইঙ্গিত করেন। ২২

তথ্যসূত্র :

১. বিহারুল আনওয়ার, ৪৫তম খণ্ড, পৃ. ১৪৫।

২. বিহারুল আনওয়ার, ৪৫তম খণ্ড, পৃ. ১৪০ (উদ্ধৃতি আমালিয়ে শেখ সাদুক, পৃ. ২৩১)।

৩. সাইয়্যেদ ইবনে তাউস, ইকবালুল আমাল, পৃ. ৫৮৮।

৪. শহীদ কাজী তাবাতাবায়ী, তাহকীক দারবারেয়ে আওয়ালীন আরবাঈনে হযরত সাইয়্যেদুশ শোহাদা, ৩য় খণ্ড, পৃ. ৩০৪।

৫. লুহুফ, পৃ. ২৩২, অবশ্য সুস্পষ্টভাবে ইমাম সাজ্জাদ (আ.)-এর নাম উল্লেখ করেননি।

৬. ইকবালুল আ’মাল, পৃ. ৫৮৮।

৭. আমিনী মুহাম্মদ আমীন, মাআ রাকবুল হোসাইনী, ৬ষ্ঠ খণ্ড, পৃ. ৩২৪, উদ্ধৃতি মাকতালুল খাওয়ারেজমী, ২য় খণ্ড, পৃ. ৭৫।

৮. আমিনী মুহাম্মদ আমীন, মাআ রাকবুল হোসাইনী, ৬ষ্ঠ খণ্ড, পৃ. ৩২৪, ৩২৫, উদ্ধৃতি মাকতালুল খাওয়ারেজমী, ২য় খণ্ড, পৃ. ৭৫।

৯. বিহারুল আনওয়ার, ৪৫তম খণ্ড, পৃ. ১৪৫।

১০. বিহারুল আনওয়ার, ৪৫তম খণ্ড, পৃ. ১৭৮, উদ্ধৃতি কামিলুজ জিয়ারাত, পৃ. ৩৪; কাফী, ৪র্থ খণ্ড, পৃ. ১৭৮।

১১. বিহারুল আনওয়ার, ৪৫তম খণ্ড, পৃ. ১৭৮, মাআ রাকবিল হোসাইনী, ৬ষ্ঠ খণ্ড, পৃ. ৩২৫-৩২৮।

১২. বিহারুল আনওয়ার, ৪৫তম খণ্ড, পৃ. ১৪৫।

১৩. বিহারুল আনওয়ার, ৪৫তম খণ্ড, পৃ. ১৭৮।

১৪. তাজকেরাতুল খাওয়াস পৃ. ২৫৯; মাআ রাকবিল হোসাইনী, পৃ. ৩২৯।

১৫. ইবনে সাদ, তাবাকাত, ৫ম খণ্ড, পৃ. ১১২।

১৬ মাআ রাকবিল হোসাইনী, ৬ষ্ঠ খণ্ড, পৃ. ৩৩০-৩৩১।

১৭. মাআ রাকবিল হোসাইনী, ৬ষ্ঠ খণ্ড, পৃ. ৩৩১-৩৩৫।

১৮. মাআ রাকবিল হোসাইনী, পৃ. ৩৩৪, তাজকেরাতুল খাওয়াস, পৃ. ২৬৫।

১৯. আল বিদায়াহ ওয়ান নিহায়াহ, ৮ম খণ্ড, পৃ. ২০৫।

২০. মাআ রাকবিল হোসাইনী, ৬ষ্ঠ খণ্ড, পৃ. ৩৩৭।

২১. আমীন আমেলী, সাইয়্যেদ মুহসিন, লাউয়ায়িজুল আশজান ফি মাকতালিল হোসাইন (আ.), পৃ. ২৫০।

২২. বিহারুল আনওয়ার, ৪৫তম খণ্ড, পৃ. ১৪৪।

0
0% (نفر 0)
 
نظر شما در مورد این مطلب ؟
 
امتیاز شما به این مطلب ؟
اشتراک گذاری در شبکه های اجتماعی:

latest article

মহানবী (স.) হতে বর্ণিত ৪০টি হাদীস (২)
যদি কেউ দাড়ি না রাখে তাহলে সে কি ...
পবিত্র ঈদে গাদীর
দাওয়াতে দ্বীনের গুরুত্ব ও ...
কারবালা ও ইমাম হোসাইন (আ.)- ১ম পর্ব
ইমাম মাহদী (আ.) এর আবির্ভাবের ৬ মাস ...
হাসনাইন (ইমাম হাসান ও ইমাম হোসাইন) ...
মসনবীর গল্প
অর্থসহ মাহে রমজানের ৩০ রোজার দোয়া
ইমাম হাসান আসকারী (আ.) এর জন্ম ...

 
user comment