বাঙ্গালী
Friday 19th of April 2024
0
نفر 0

সূরা ইউসুফ; (৩০তম পর্ব)

সূরা ইউসুফ; (৩০তম পর্ব)

সূরা ইউসুফ; আয়াত ১০৭-১০৯

সূরা ইউসুফের ১০৭ নম্বর আয়াতে মহান আল্লাহ বলেছেন-

أَفَأَمِنُوا أَنْ تَأْتِيَهُمْ غَاشِيَةٌ مِنْ عَذَابِ اللَّهِ أَوْ تَأْتِيَهُمُ السَّاعَةُ بَغْتَةً وَهُمْ لَا يَشْعُرُونَ

“যারা বিশ্বাস স্থাপন করে না) তারা কি আল্লাহর সর্বগ্রাসী শাস্তি থেকে নিরাপদ হয়ে গেছে? অথবা তাদের কাছে হঠাৎ কেয়ামত এসে যাবে যে তারা টেরও পাবে না!" (১২:১০৮)

আগের আয়াতে রাসুলেপাক (সা.)কে সান্ত্বনা দেয়ার জন্য বলা হয়েছে, তারা যদি আপনার কথার ওপর বিশ্বাস স্থাপন না করে তাহলে আপনি মনক্ষুণ্ন হবেন না, কারণ তারা বিশ্বজগতের স্রষ্টা মহান আল্লাহকেও বিশ্বাস করে না। এছাড়া তাদের মধ্যে যারা বাহ্যত ঈমান এনেছে বা বিশ্বাস স্থাপন করেছে তাদের সবার ঈমান আবার পূর্ণ নয়, কারণ তাদের অধিকাংশই শিরক বা আল্লাহর সঙ্গে অংশীস্থাপনের মত বড় পাপের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট হয়ে আছে। কাজেই প্রকৃত ঈমানদার কমই পাওয়া যায়। ১০৭ নম্বর আয়াতে বলা হচ্ছে, যারা প্রতিফল দিবস বা কেয়ামতের দিনের ওপর বিশ্বাস রাখে না তাদেরকে আপনি হুঁশিয়ার করে দিন যে, ইহকালে যদি পাপের জন্য কারো শাস্তি না হয় বা কেউ যদি অকস্মাৎ মৃত্যুবরণ করে তাহলে সে পার পেয়ে যাবে এমন নয়। কেয়ামতের দিন তাদেরকে পাপের বোঝা মাথায় নিয়ে উপস্থিত হতে হবে, এবং জাহান্নামের শাস্তি সেদিন তাদেরকে গ্রাস করবে। কাজেই কেয়ামতের শাস্তির কথা সবারই মনে রাখা উচিত, এ জীবনই শেষ নয়, মানুষকে তার প্রতিটি কাজের জন্য হিসেব দিতে হবে । প্রত্যেকেই তাদের ভালো কাজের সুফল পাবে আবার পাপের জন্য উপযুক্ত শাস্তিও ভোগ করবে।

১০৮ নং আয়াতে  বলা হয়েছে,

قُلْ هَذِهِ سَبِيلِي أَدْعُو إِلَى اللَّهِ عَلَى بَصِيرَةٍ أَنَا وَمَنِ اتَّبَعَنِي وَسُبْحَانَ اللَّهِ وَمَا أَنَا مِنَ الْمُشْرِكِينَ

"(হে রাসূল) বলে দিন, এটাই আমার পথ, আমি এবং আমার অনুসারীরা মানুষকে আল্লাহর পথে আহ্বান করি সজ্ঞানে। আল্লাহ পবিত্র। আমি অংশীবাদীদের অন্তর্ভুক্ত নই।" (১২:১০৮)

এই আয়াতে মূলত মানুষকে সত্যের দিকে আহ্বানের পদ্ধতি শিক্ষা দেয়া হয়েছে। এখানে বলা হয়েছে ঈমান বা বিশ্বাস হতে হবে জ্ঞাননির্ভর। প্রথমে আল্লাহকে চিনতে হবে, বুদ্ধিবৃত্তির মাধ্যমে, জ্ঞান ও বিবেকের সাহায্যে আল্লাহর অস্তিত্ব আবিস্কার করতে হবে। এরপর আসবে ঈমান বা বিশ্বস স্থাপনের পালা। ইসলাম প্রচারের ক্ষেত্রে নবী করিম (সা) এর এটাই ছিল পদ্ধতি, এ জন্য দেখা যায় যারা রাসূল (সা.) এর হাতে ইসলাম গ্রহণের সৌভাগ্য অর্জন করেছেন তাদের সবাই ধর্মের পথে জীবন উৎসর্গ করতে কখনো দ্বিধা করেননি। বিশ্বাসের শিথিলতা কিংবা শিরক ঈমানী দুর্বলতার অন্যতম কারণ। দুঃখজনক হলও সত্য যে বহু মানুষের ঈমান শিরকের দ্বারা আক্রান্ত। এজন্য ইসলাম প্রচারের দায়িত্বে যারা নিয়োজিত তাদের কর্তব্য হচ্ছে মানুষের জ্ঞান ও বুদ্ধিবৃত্তিক উৎকর্ষতার জন্য কাজ করা এবং প্রথমে নিজেকে শিরক থেকে মুক্ত করে অন্যকে এ ব্যাপারে সতর্ক করা।

এ সূরার ১০৯ নম্বর আয়াতে বলা হয়েছে,

وَمَا أَرْسَلْنَا مِنْ قَبْلِكَ إِلَّا رِجَالًا نُوحِي إِلَيْهِمْ مِنْ أَهْلِ الْقُرَى أَفَلَمْ يَسِيرُوا فِي الْأَرْضِ فَيَنْظُرُوا كَيْفَ كَانَ عَاقِبَةُ الَّذِينَ مِنْ قَبْلِهِمْ وَلَدَارُ الْآَخِرَةِ خَيْرٌ لِلَّذِينَ اتَّقَوْا أَفَلَا تَعْقِلُونَ

"(হে রাসূল) তোমার পূর্বে জনপদবাসীদের অনেককে প্রত্যাদেশবাণীসহ প্রেরণ করেছিলাম, অবিশ্বাসীরা কি পৃথিবীতে ভ্রমণ করেনি এবং তাদের পূর্ববর্তীদের কি পরিণাম হয়েছিল তা কি দেখেনি? যারা সাবধানী তাদের জন্য পরলোকই শ্রেয়, তোমরা বোঝ না?” (১২:১০৯)

অবিশ্বাসীরা রাসূল (সা) এর ব্যাপারে যে সব আপত্তি উত্থাপন করত তার মধ্যে অন্যতম একটি ছিল যে, আল্লাহ যদি রাসূলই পাঠাবেন তাহলে কোনো মানুষকে কেন রাসূল হিসেবে পাঠাতে যাবেন? রাসূল হিসেবে তিনি কাউকে মনোনীত করলে ফেরেশতাদের মধ্য থেকেই তিনি তা করবেন। এই আয়াতে কাফেরদের এই ভ্রান্ত মানসিকতার জবাবে বলা হয়েছে, তারা কি তাদের পূর্বপুরুষদের কাছ থেকে শুনেনি বা পড়েনি যে অতীতের সব পয়গম্বরই ছিলেন মানুষ। আকাশ থেকে কোনো ফেরেশতা রাসূল বা নবী হিসেবে কখনও আসেনি। হে রাসূল! তারা যা বলছে নেহায়েত গোয়ার্তুমির কারণেই তা বলছে, আসলে আকাশ থেকে ফেরেশতা নেমে আসলেও তারা আপনার কথা বিশ্বাস করবে না ।

আয়াতটি শেষ ভাগে পাপাচারী এবং সৎকর্মশীলদের পরিণতির ব্যাপারে ইঙ্গিত করা হয়েছে। বলা হয়েছে, ঈমানদার ব্যক্তিরা এই পৃথিবীতে কষ্ট ও সমস্যার মধ্যে জীবন যাপন করলেও পরকালে আল্লাহ পাক তাদেরকে

0
0% (نفر 0)
 
نظر شما در مورد این مطلب ؟
 
امتیاز شما به این مطلب ؟
اشتراک گذاری در شبکه های اجتماعی:

latest article

কারবালার বিয়োগান্ত ঘটনা : একটি ...
Protest einer Antikriegsgruppe gegen Luftangriff Amerikas auf ein Krankenhaus
খলিফা নির্বাচনের পদ্ধতি
‘বাতিলের মুকাবিলায় ঐক্যই ...
অর্থসহ মাহে রমজানের ৩০ রোজার দোয়া
কোরআন ও চিকিৎসা বিজ্ঞান
শিয়াদের মৌলিক বিশ্বাস (পর্ব-১)
সূরা ইউনুস;(১৭তম পর্ব)
মহানবী (স.) হতে বর্ণিত ৪০টি হাদীস (২)
পরকালের জন্য প্রস্তুতি এবং ...

 
user comment