বাঙ্গালী
Tuesday 23rd of April 2024
0
نفر 0

শ্রমের মর্যাদা

শ্রমের মর্যাদা

মানবতার ধর্ম ইসলাম শুধু আচার সর্বস্ব কিছু ইবাদতের নাম নয় বরং জীবনের সার্বিক কর্মকান্ডের ব্যবস্থাপনায় ইসলামের দিক নির্দেশনা খুবই সুন্দর ও সুস্পষ্ট। মহান আল্লাহ বলেনঃ “ফাইয়া কুদিয়াতিসসালাতু ফানতাশিরু ফিল আরদ্বি ওয়াবতাগূ মিন ফাদলিল্লাহি ওয়াজকুরুল্লাহা কাসিবান আআল্লাকুম তুফলিহুন।” (সূরা জুমুআ, আয়াত ৩০) অর্থাৎ নামায সম্পাদন শেষে তোমরা জমিনে ছড়িয়ে পড় এবং আল্লাহর অনুগ্রহ অনুসন্ধান কর। আর আল্লাহকে অধিক হারে স্মরণ কর। নিশ্চয়ই তোমরা সফল হবে।
সবুজ পত্র-পল্লবে সুশোভিত বৃক্ষরাজির মূলে যেভাবে খাদ্যরস সক্রিয়, তেমনি সভ্যতার উত্থান ও শিল্পের বিকাশে শ্রমিকের মেধা ও শ্রম কার্যকর। জীবন জীবিকার নেহায়েত প্রয়োজনে শ্রমিকরা যুগ যুগ ধরে শ্রম বিনিময় করে আসছে। অথচ নানা আন্দোলনের পরও আজো শ্রমিকরা তাদের ন্যায্য অধিকার ফিরে পায়নি। জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলামের কার্যকর লেখায় শ্রমিকদের বিবর্ণ চিত্র ফুটে উঠেছে এভাবে।

 দেখিনু সেদিন রেলে/কুলি বলে এক বাবু সাব তারে/ঠেলে দিল নিচে ফেলে। চোখ ফেটে এল জল/এমনি করে জগৎ জুড়িয়া মারখাবে দুর্বল?
মালিক পক্ষকে পারিশ্রমিক দিতে অকারণে বিলম্ব করা উচিত নয়। হযরত মুহাম্মদ (সা.) বলেছেনঃ শ্রমিকের শরীরের ঘাম মুছার পূর্বেই তাদের পারিশ্রমিক দিয়ে দাও।  শ্রমিক যাতে তার শ্রমের ন্যায্য মূল্য পেতে পারে সে জন্য তিনি বলেছেন মজুরের বেতন নির্দিষ্ট না করে শ্রমিককে কাজে নিযুক্ত করবে না। মালিক ও শ্রমিকের কাজের জন্য যে নীতিমালা ইসলাম দিয়েছে তা অনুকরণ অনুসরণ করলে শ্রমিক তার ন্যায্য অধিকার (পারিশ্রমিক) থেকে বঞ্চিত হতে হবে না এবং শ্রমিক মালিকের মধ্যে কোন দিন ঝগড়া বিবাদ ও মনোমালিন্য হবে না। বিশ্ব মানবতার মুক্তির দিশারি দোজাহানের বাদশা নবীকুল শিরোমনি রাসুল কারিম (সা.) এর কিশোর গোলাম যায়েদ (রা.) বলেন, আমি রাসুল (সা.) এর নিকট ১০ বছর যাবৎ খেদমতে ছিলাম। এই ১০ বছরে নবী (সা.) আমাকে কোনদিন ধমক দিয়ে কথা বলেন নাই।

নবী করিম (সা.) বলেছেনঃ যে ব্যক্তি তার পরিবারের জীবিকা নির্বাহের প্রয়োজনে শ্রম দেয়, কষ্ট করে, সে ব্যক্তি আল্লাহর পথে জেহাদকারী মুজাহিদের মতো....আমি আমার উম্মাতের ব্যাপারে সবচেয়ে বেশি যে যে বিষয়ে উদ্বিগ্ন ও ভীত তাহলো উদরপূজা, বেশি ঘুম এবং বেকারত্ব...যে বা যারা নিজের জীবনের দায়িত্বভার জনগণের ওপর চাপিয়ে দেয় সে বা তারা আল্লাহর রহমত থেকে দূরে অবস্থান করে। রাসূলে খোদা (সা.) সেই শৈশবকাল থেকেই বিচিত্র কাজকর্মে ব্যস্ত ছিলেন। শৈশব এবং কৈশোরে তিনি রাখালবৃত্তি করেছেন এবং যুবক বয়সে ব্যবসা বাণিজ্যের কাজ করেছেন। নবুয়্যতের দায়িত্ব পাবার পরও তিনি তাঁর কাজকর্ম থেকে বিরত ছিলেন না এবং কখনোই তিনি রাজা বাদশাদের মতো শাহী জীবনযাপন করেন নি।
নবী করিম (সা.)একদিন দেখলেন শক্তিমান এক যুবক সেই সকাল থেকে কাজ করে যাচ্ছে। তাঁর সঙ্গীদের কেউ কেউ বললেন,এই যুবক যদি নিজের যৌবনটাকে আল্লাহর রাস্তায় কাজে লাগাতো তাহলে তা কতোই না প্রশংসনীয় হতো। নবীজী বললেনঃ ‘এভাবে বলো না, এই যুবক যদি নিজের চাহিদা মেটানোর জন্যে এবং অপরের কাছে সাহায্য চাওয়া থেকে মুক্তি পাবার জন্যে কাজ করে থাকে, তাহলে তার শ্রম আল্লাহর রাস্তাতেই ব্যয় হচ্ছে। একইভাবে যদি সে তার অসমর্থ বাবা-মার স্বার্থে কিংবা তার অপ্রাপ্ত বয়স্ক ছেলেপুলেকে অপরের দ্বারস্থ হওয়া থেকে বিরত রাখার জন্যে কাজ করে থাকে, তাহলেও সে খোদার পথেই শ্রম দিচ্ছে'। নবীজী যেখানেই কারো প্রতি মনোনিবেশ করতেন তখনই তার পেশা সম্পর্কে জানতে চাইতেন। যদি সে বলতো যে কোনো কাজ করে না, তাহলে নবীজী রাগ করে বলতেনঃ ‘আমার আনুকূল্য হারালো । কোনো মুমিনের যদি পেশা না থাকে, তাহলে সে নিজের ধর্মকেই জীবিকার উপায় করে নেয়'।
নবীজীর একথার মানে হলো,জীবিকার ন্যূনতম জোগান না থাকলে মানুষের ধর্ম ও বিশ্বাস বিপদের মুখে পড়ে যায়। এ কারণে আমাদের সবারই এই দোয়া করা উচিতঃ ‘হে খোদা! আমাদেরকে বরকত দান করো! আমাদেরকে আর্থিক দৈন্যতার মাঝে আবদ্ধ করো না'! কেননা মানুষের রুটি রুযি নিশ্চিত না হলে ধর্মীয় কর্তব্য পালনে অমনোযোগী হয়ে পড়ে । যাই হোক আল্লাহ আমাদের সবাইকে কর্মমূখর জীবন দান করুন।
নবীজী এবং তাঁর আহলে বাইত কথায় এবং বাস্তবে কাজ করার ওপর ব্যাপক গুরুত্ব দিয়েছেন এবং নিজেরাও জীবিকা নির্বাহের কাজে তৎপর ছিলেন । একদিন ইমাম কাজেম (আ) নিজের ক্ষেতে কাজ করছিলেন । আলি বিন আবি হামযাহ নামে এক লোক তাঁর কাছে এসে বললেনঃ ‘কেন এ কাজ অন্যদেরকে করতে দিচ্ছেন না' ? ইমাম বললেনঃ কেন দেবো! আমার চেয়েও উত্তম ব্যক্তি সবসময় এরকম কাজে ব্যস্ত ছিলেন। লোকটি জানতে চাইলোঃ কে ? ইমাম বললেনঃ স্বয়ং রাসুলে খোদা এবং ইমাম আলী (আ)। তাঁদের সবাই আমার পূর্বপুরুষ। মূলত কাজ করাটা নবীজী এবং আল্লাহর মনোনীত বান্দাদের সুন্নাত। আলী (আ) এর জীবনীতে এসেছে তিনি সবসময় জেহাদের ময়দান থেকে ফিরে শিক্ষা ও বিচার সংক্রান্ত তাঁর নিয়মিত কাজকর্মের পাশাপাশি কৃষিকাজ করতেন। তিনি নিজ হাতে বহু খেজুর বাগান আবাদ করেছেন। তিনি মদিনার পশ্চিমের ‘ইয়াম্বা' এলাকায় নিজ হাতে একটি কূপ খনন করেছেন । প্রচণ্ড বাতাসের বেগ থাকায় এ এলাকায় কেউ কাজ করতো না । আলী (আ) ঐ সেখানে জমি কিনে নিজ হাতে বহু কূপ খনন করেন এবং বহু খেজুর বাগান করেন,কষ্ট তাঁকে কাজ থেকে ফিরিয়ে রাখতে পারে নি।
আলী (আ) নিজের কর্মময় জীবনের স্মৃতি বর্ণনা করতে গিয়ে বলেছেনঃ ‘মদিনায় ভীষণরকম ক্ষুধার্ত হয়ে পড়েছিলাম। কাজের সন্ধানে তাই ঘর থেকে বের হলাম। মদিনার উপকণ্ঠেই দেখতে পেলাম এক বুড়িকে, বেশ কিছু মাটির ঢিলা জমিয়ে রেখেছে। বুঝতে পারলাম সেগুলোকে পানি দিয়ে ভেজাতে চায়। আমি তার কাছে গিয়ে বললাম কাজটা আমি করে দিতে চাই, তবে মজুরি হিসেবে প্রতি বালতি পানি কূপ থেকে তোলার জন্যে একটি করে খুরমা দিতে হবে। আমি ষোলো বালতি পানি তুললাম। আমার হাতে ফোসকা পড়ে গিয়েছিল । ষোলোটি খুরমা নিয়ে নবীজীর কাছে গেলাম এবং দুজনে সেগুলো খেলাম' ।
এরকম আরেকটি বর্ণনায় এসেছে, একদিন আলী (আ) খুরমার অনেক বিচি বহন করে নিয়ে যাচ্ছিলেন । তাঁকে জিজ্ঞেস করা হলো-এগুলো কী ? আলী (আ) বললেনঃ ইনশাআল্লাহ খুরমা গাছ। লোকটি বললো, ইমাম ঐ খুরমা-বিচিগুলো সবই নিজ হাতে রোপন করলেন।
হযরত আলী (আ) একবার এক বক্তব্যে বলেছিলেনঃ মুমিন ব্যক্তি সবসময় কর্মব্যস্ত থাকে। যে কাজ করে তার শক্তি বেড়ে যায়। জীবিকার কার্যকারণ হলো কাজ। অর্থাৎ কাজের সাথে জীবিকার সম্পর্ক। তাই জীবিকা অর্জন করতে হলে সুন্দর ও সুশৃঙ্খলভাবে কাজ করতে হবে । শরীর ভালো লাগছে না-এরকম অলসতা কিংবা ফুরফুরে ভাব উভয় অবস্থাতে যারা কাজ করে তাদের প্রতি মোবারকবাদ। কেননা বিমর্ষতা এবং অলসতা পরকালকে ধ্বংস করে দেয় । এভাবে লক্ষ্য করা যাবে ন্যায়বিচার, বীরত্ব, তাকওয়া, জ্ঞানের দিক থেকে অন্যতম শীর্ষস্থানে থাকা সত্ত্বেও কাজ কর্মকে বিশেষ গুরুত্বের সাথে দেখেছেন । হযরত আলী (আ) এর দৃষ্টিতে মানুষ যদি তার পেশায় ও কাজের ক্ষেত্রে আল্লাহর দেওয়া বিধান এভং মানবীয় মূল্যবোধগুলোর সীমারেখা ঠিকঠাকমতো মেনে চলে,তাহলে তা এক ধরনের ইবাদাত । এ ধরনের পেশাজীবী লোক আল্লাহর প্রিয়ভাজন। তিনি বলেছেনঃ ‘আল্লাহ রাব্বুল আলামিন পেশাজীবী এবং আমানতদারী ভালোবাসেন'।
ইসলামে একজন শ্রমিক এবং নিয়োগদাতার মধ্যে সম্পর্ক হলো সহকর্মী এবং অংশীদারিত্বের সম্পর্ক। ইসলামের দৃষ্টিতে একজন শ্রমিক এবং একজন নিয়োগদাতার মধ্যকার আচার ব্যবহার হতে হবে বিশ্বস্ততা,আন্তরিকতা ও সম্মানের ভিত্তিতে।নবী কারিম (সা.), হযরত আলী (আ)সহ অন্যান্য ইমামগণ সবসময় কারিগরদের যথাযোগ্য মর্যাদা দিয়েছেন এবং তাদের অধিকার রক্ষায় সদাসচেষ্ট ছিলেন। নবীজী বলেছিলেনঃ শ্রমিকের ব্যাপারে নিয়োগদাতার করণীয় হলো তাকে ভালো খাবার এবং পোশাক দিতে হবে এবং সাধ্যের অতীত কাজ তার ওপর চাপানো যাবে না'। নবীজী আরো বলেছেনঃ ‘তোমরা সবাই তোমাদের অধীনস্থদের ব্যাপারে দায়িত্বশীল। যে-ই শ্রমিকদের পারিশ্রমিক দেওয়ার ব্যাপারে জুলুম করবে, আল্লাহ তার নেক আমলগুলো নষ্ট করে দেবেন এবং সে বেহেশতের মনোমুগ্ধকর সুঘ্রাণ থেকে বঞ্চিত হবে'। আহলে বাইতের মহান ইমাম হযরত সাজ্জাদ (আ)ও শ্রমিকদের ব্যাপারে সদয় এবং ন্যায়বান হওয়া এবং তাদের ভুলত্রুটিগুলোকে ক্ষমার দৃষ্টিতে দেখার ওপর গুরুত্ব দিয়েছেন। একইভাবে শ্রমিকদের ওপর অত্যাচার করতে নিষেধ করেছেন।
ইমাম সাজ্জাদ (আ) আরো বলেছেনঃ যে ব্যক্তিটি তোমার কাজগুলো আঞ্জাম দিচ্ছে তার অধিকারের ব্যাপারে তোমার জেনে রাখা উচিত ঐ শ্রমিকও তোমার মতোই আল্লাহর সৃষ্টি এবং প্রকৃতপক্ষে তোমার আদি পিতা-মাতা অর্থাৎ আদম এবং হাওয়া (আ) এরই উত্তরসূরি । তুমি তার স্রষ্টাও নও মালিকও নও এবং তার রুযিও তোমার হাতে নয়। তাই তুমি তার সাথে সদাচরণ করো এবং তাকে নির্যাতন করো না'।
সবশেষে ইমাম রেযা (আ) এর জীবনের একটি বর্ণনা বিশেষ করে শ্রমিকদের অধিকার আদায় সংক্রান্ত একটি বর্ণনা দেওয়ার মধ্য দিয়ে পরিসমাপ্তি টানবো ।
 সোলায়মান নামের এক লোক ইমাম রেযা (আ) এর সাথে সঙ্গ দেওয়ার এক দিনের একটি স্মৃতি সম্পর্কে বলেছেনঃ
‘সেদিন আমার সৌভাগ্য হয়েছিলো ইমামকে তাঁর ঘর পর্যন্ত সঙ্গ দেওয়ার । ইমাম রেযা (আ) এর ঘরের দরোজায় পৌঁছলাম । বিদায় চাইতে গেলে ইমাম তাঁর ঘরে আমাকে আমন্ত্রণ জানালো । আমি ভীষণ খুশি ও আগ্রহ ভরে ইমামের আমন্ত্রণ গ্রহণ করলাম এবং ঘরের ভেতর ঢুকলাম । বাসায় তখন বেশ কজন শ্রমিক কাজ করছিলো । তারা ইমামকে দেখেই কাজ রেখে তাঁর কাছে এসে সালাম করলো । ইমামের ঘর ছাড়া আর কোথাও শ্রমিকেরা তাদের  নিয়োগদাতাকে দেখে এই পরিমাণ উৎফুল্ল হতো না । ইমাম রেযা (আ) মুচকি হেঁসে তাদের সালামের জবাব দেন। এমন সময় ইমামের নজর পড়ে অপরিচিত এক শ্রমিকের ওপর । ইমাম তার সম্পর্কে জানতে চাইলেন কে ও! জবাব এলো নতুন শ্রমিক, সম্প্রতি তাদের দলে ভিড়েছে । ইমাম জানতে চাইলেন তার পারিশ্রমিক ঠিক করা হয়েছে কিনা । জবাব দিলো-‘না!তাকে যা-ই দেন তা-ই নেবে'।
দেখলাম এ কথা শুনে ইমামের চেহারাটা কেমন যেন পরিবর্তন হয়ে গেল। মনে হলো যেন বিরক্ত হলেন এবং উঠোনের দিকে চলে গেলেন । আমি জিজ্ঞেস করলাম-হে ইমাম! কেন রাগ করলেন! ইমাম বললেনঃ বহুবার তাদেরকে বলেছি যে নতুন কোনো শ্রমিক এলে আগে তার পারিশ্রমিক ঠিক করে নেবে । চুক্তি বা কথাবার্তা ছাড়া কাজ করলে তাকে তিন গুণ বেশি পারিশ্রমিক দিলেও ভাবে কম দেওয়া হয়েছে । আর চুক্তি অনুযায়ী পারিশ্রমিক দিলে তা পেয়ে খুশি হয়ে যায়, তারচেয়ে খানিকটা বেশি দিলে বখশিস হিসেবে নিয়ে আরো খুশি হয়' । যেমনটি মহানবী (সা.)বলেছেনঃ মজুরের বেতন নির্দিষ্ট না করে শ্রমিককে কাজে নিযুক্ত করবে না।

0
0% (نفر 0)
 
نظر شما در مورد این مطلب ؟
 
امتیاز شما به این مطلب ؟
اشتراک گذاری در شبکه های اجتماعی:

latest article

মাদাগাস্কারে মিলাদুন্নাবি (স.) ...
বিশ্বশক্তি চায় খণ্ড খণ্ড সিরিয়া
ইরান দুর্বল হলে বাড়বে আঞ্চলিক ...
এবার ক্যালিফোর্নিয়ায় ট্রাম্পের ...
ইমাম মাহদী (আ.)-এর জীবনের ...
এবার গরুর প্রতি নিষ্ঠুরতার দায়ে ...
ধৈর্য ও সহনশীলতা
শেইখ যাকযাকির মুক্তির দাবীতে ...
‘মার্কিন অস্ত্র দিয়ে হত্যা করা ...
দৃষ্টিহীনদের জন্য স্মার্ট ...

 
user comment