বাঙ্গালী
Thursday 25th of April 2024
0
نفر 0

দেখেছো দুনিয়ায় সম্পদ পুঞ্জীভূত করে কিছুই অর্জন করতে পারোনি?"

২ নভেম্বর(রেডিও তেহরান): হে আদম তুমি এবং তোমার স্ত্রী জান্নাতে বসবাস কর। এরপর সেখানকার যে কোনও স্থান থেকে যা ইচ্ছা খাও তবে (সাবধান!) এ বৃক্ষের কাছে যেয়ো না তাহলে তোমরা অবিচারকারীদের মধ্যে শামিল হয়ে যাবে।
দেখেছো দুনিয়ায় সম্পদ পুঞ্জীভূত করে কিছুই অর্জন করতে পারোনি?"

২ নভেম্বর(রেডিও তেহরান): হে আদম তুমি এবং তোমার স্ত্রী জান্নাতে বসবাস কর। এরপর সেখানকার যে কোনও স্থান থেকে যা ইচ্ছা খাও তবে (সাবধান!) এ বৃক্ষের কাছে যেয়ো না তাহলে তোমরা অবিচারকারীদের মধ্যে শামিল হয়ে যাবে।
 
 
 
শয়তান নিজের অভিশপ্ত হওয়ার ঘটনাটির প্রতিশোধ নেয়ার জন্য আদম (আ.) ও তাঁর স্ত্রীকে কুমন্ত্রণা দেয়ার উদ্যোগ নেয়। সে নানা ধরনের প্রতারণার জাল বিছায়। শয়তান আদম ও হাওয়াকে বলে: তোমরা যাতে ফেরেশতা না হয়ে যাও ও  বেহেশতের মধ্যে অমরত্ব লাভ না করো সে জন্যই আল্লাহ তোমাদেরকে ওই গাছের কাছে যেতে নিষেধ করেছেন। সে আল্লাহর নামে কসম কেটে বলে যে, আমি তোমাদের কল্যাণকামী। অবশেষে শয়তানের এইসব কুমন্ত্রণায় প্রভাবিত হয়ে আদম (আ.) ও হাওয়া নিষিদ্ধ ফল খান। কারণ, কেউ যে আল্লাহর নামে কসম খেয়ে মিথ্যা কথা বলতে পারে তা তাঁরা কল্পনাও করেননি। নিষিদ্ধ ফল খাওয়ার কারণে খোদার প্রতি আদম (আ.) ও হাওয়ার আনুগত্যের পোশাক খুলে যায়। ফলে তারা বেহেশত থেকে বের হয়ে যেতে বাধ্য হন।
 
 
 
এই ঘটনা থেকে বোঝা যায় মানুষের মনের মধ্যে বিবেক ও কু-প্রবৃত্তির দ্বন্দ্বে শয়তানের কুমন্ত্রণা প্রতিরোধ করতে পারে খোদাভীতি। এ দ্বন্দ্বে পরাজিত হলে মানুষকে পার্থিব জীবনে নানা কষ্টের শিকার হতে হবে।
 
 
 
আদম (আ.) ও হাওয়ার প্রতি শয়তানের কুমন্ত্রণা দেয়ার ঘটনা বর্ণনার পর আদম সন্তানদের জন্য গঠনমূলক কিছু কর্মসূচি দেয়া হয়েছে পবিত্র কুরআনে। তাদেরকে শয়তানের ধোঁকা না খাওয়ার ব্যাপারে সতর্ক করে দেয়া হয়েছে এবং বেশ কয়েকবার 'হে আদম সন্তানগণ' বলে অভিহিত করা হয়েছে। সুরা আরাফের ২৬ নম্বর আয়াত হচ্ছে এমনই এক আয়াত। এই আয়াতে মহান আল্লাহ বলছেন:
 
 
 
২৬. হে বনী-আদম! আমি তোমাদের জন্যে পোশাক নাজিল করেছি, যা তোমাদের লজ্জাস্থান আবৃত করে এবং নাজিল করেছি সাজসজ্জার বস্ত্র; আর রয়েছে খোদাভীতি বা পরহিজগারির পোশাকও। এ পোশাকই সর্বোত্তম। এসবই আল্লাহর কুদরতের অন্যতম নিদর্শন, যাতে তারা (আল্লাহর নেয়ামতের ব্যাপারে) চিন্তা-ভাবনা করে বা উপদেশ নেয়।
 
 
 
বেশিরভাগ মানুষই যে বিষয়টির ব্যাপারে উদাসীন তা হল মৃত্যু ও পার্থিব জীবনের অবসান। কেবল মানুষেরই যে মৃত্যু আছে তা নয়। জাতি ও সভ্যতাগুলোরও মৃত্যু রয়েছে। বড় বড়  অনেক সভ্যতা ইতিহাসের এক বিশাল অংশ জুড়ে মানুষের চোখ ধাঁধিয়ে দেয়ার পর অবশেষে কালের গর্ভে বিলীন হয়ে গেছে অত্যাচার, ব্যভিচার ও হঠকারিতার কারণে। সম্পদ ও ক্ষমতার অধিকারীরা বেশিরভাগ সময়ই এটা ভেবেছে যে তাদের ক্ষমতা ও সম্পদ সব সময়ই অক্ষত বা অক্ষুণ্ণ থাকবে। কিন্তু মহান আল্লাহ  সুরা আ’রাফের ৩৪ নম্বর আয়াতে মানুষকে স্মরণ করিয়ে দিচ্ছেন যে:
 
 
 
৩৪. প্রত্যেক সম্প্রদায়ের একটি মেয়াদ রয়েছে। যখন তাদের মেয়াদ এসে যাবে, তখন তারা না এক মুহূর্ত পিছে যেতে পারবে, আর না এগিয়ে আসতে পারবে।
 
 
 
সুরা আ’রাফের ৪৪ নম্বর আয়াত থেকে ৫০ নম্বর আয়াতে বেহেশতি, দোযখবাসী এবং বেহেশত ও দোযখের মাঝামাঝি স্থান  তথা আ’রাফে অবস্থানকারী মানুষদের মধ্যকার সংলাপ তুলে ধরা হয়েছে।
 
 
 
৪৪.জান্নাতিরা দোযখিদেরকে ডেকে বলবে: আমাদের সাথে আমাদের প্রতিপালক যে ওয়াদা করেছিলেন, তা আমরা সত্য পেয়েছি, তোমরাও কি তোমাদের প্রতিপালকের ওয়াদা সত্য পেয়েছ? তারা বলবে: হ্যাঁ। এরপর একজন ঘোষক উভয়ের মাঝখানে ঘোষণা করবে: আল্লাহর অভিশাপ জালিমদের উপর।
 
 
 
আ’রাফ শব্দটি সুরা আ’রাফে দুই বার এসেছে। এর আভিধানিক অর্থ হলো উঁচু স্থান। বেহেশত ও দোযখের মাঝামাঝি স্থানে অবস্থিত এই স্তরটিকে জান্নাত ও জাহান্নামের মধ্যকার বাফার জোন বা ব্যারিকেড বলা যায়। এই ব্যারিকেডের কারণে বেহেশতবাসী ও দোযখবাসী পরস্পরকে দেখতে পায় না। তবে তারা পরস্পরের কথা শুনতে পারে।
 
 
 
কিন্তু যারা আ’রাফে থাকেন তারা বেহেশতবাসী ও দোযখবাসী-উভয়কেই দেখতে পারেন এবং তাদেরকে চিনতেও পারেন। আ’রাফবাসীদেরকে কয়েকটি কারণে কিছু সময়ের জন্য বেহেশত থেকে দূরে রাখা হয়। তবে তারা বেহেশত পাওয়ার আশা রাখেন। তারা যখন বেহেশতবাসীদের দিকে তাকান তখন তারা এই সৌভাগ্যবানদের প্রশংসা করেন ও তাদের সঙ্গে থাকার আশা পোষণ করেন। আর আ’রাফবাসীরা যখন বিপরীত দিকে তাকান তখন দোযখবাসীদের দেখতে পান ও তাদের পরিণতি দেখে ভীত-সন্ত্রস্ত হয়ে পড়েন এবং দোযখের হাত থেকে রক্ষার জন্য আল্লাহর আশ্রয় কামনা করতে থাকেন।
 
সুরা আ'রাফের ৪৬ ও ৪৭ নম্বর আয়াতে এসেছে:
 
“৪৬.উভয়ের অর্থাৎ বেহেশতী ও দোযখীদের মাঝখানে একটি প্রাচীর বা ব্যারিকেড থাকবে। (এটিই আ’রাফ।) আ’রাফের উপরে অনেক লোক থাকবে। তারা প্রত্যেককে তথা প্রত্যেক বেহেশতী ও দোযখীকে তার চিহ্ন দেখে চিনে নেবে। তারা জান্নাতিদেরকে ডেকে বলবে: তোমাদের উপর শান্তি বর্ষিত হোক। তারা তখনও জান্নাতে প্রবেশ করবে না, কিন্তু তাতে প্রবেশ করতে আগ্রহী হবে।  ৪৭. যখন তাদের দৃষ্টি দোযখীদের উপর পড়বে, তখন তারা বলবে: হে আমাদের প্রতিপালক, আমাদেরকে এ জালেমদের সাথী করো না।”
 
 
 
আ’রাফবাসীরা একদল দোযখীকে চেনার পর তাদেরকে বলবে: দেখেছো  দুনিয়ায় সম্পদ পুঞ্জীভূত করা, স্বার্থান্ধ হওয়া ও  সত্যের মোকাবেলায় অহংকার দেখানোর কারণে তোমরা কিছুই অর্জন করতে পারোনি, অর্থাৎ এসব করে তোমাদের কোনো লাভই হয়নি!
 
এভাবে তারা দোযখবাসীকে তিরস্কার করবে।#


source : irib
0
0% (نفر 0)
 
نظر شما در مورد این مطلب ؟
 
امتیاز شما به این مطلب ؟
اشتراک گذاری در شبکه های اجتماعی:

latest article

ইমাম জয়নুল আবেদীন (আ.) তাঁর বাবার ...
হুদায়বিয়ার সন্ধি: ইসলামের ...
ইমাম হোসাইন (আ.)-এর মহান শাহাদাতের ...
ইমাম রেযা (আ.)
নবী রাসূল প্রেরণের প্রয়োজনীয়তা
ইমাম হাসান (আ.) এর শাহাদাত
অষ্টম ইমাম হযরত রেযা (আ.) স্মরণে
কোমে হযরত ফাতেমা মাসুমার (আ.) জন্ম ...
হযরত ইমাম হোসাইন বিন আলী আ
হযরত ফাতেমা (সা.আ.) এর ফজিলত ও ...

 
user comment