বাঙ্গালী
Saturday 20th of April 2024
0
نفر 0

ফুলছড়িতে নদী ভাঙনে ৩শ' পরিবার গৃহহীন

আহলে বাইত বার্তা সংস্থা (আবনা) : গাইবান্ধায় যমুনা, তিস্তা, করতোয়া ও ঘাঘট নদ-নদীর পানি কমে যাওয়ায় সার্বিক বন্যা পরিস্থিতির কিছুটা উন্নতি হলেও যমুনা-ব্রহ্মপুত্রের স্রোতের তীব্রতা বৃদ্ধি পাওয়ায় এক সপ্তাহে ফুলছড়ি উপজেলার বিভিন্ন এলাকায় ভাঙন অব্যাহত রয়েছে। এদিকে অমাবস্যা জোয়ারের প্রভাবে বরগুনার বিভিন্ন এলাকার বেড়িবাঁধ ভেঙে অন্তত ২০টি
ফুলছড়িতে নদী ভাঙনে ৩শ' পরিবার গৃহহীন

আহলে বাইত বার্তা সংস্থা (আবনা) : গাইবান্ধায় যমুনা, তিস্তা, করতোয়া ও ঘাঘট নদ-নদীর পানি কমে যাওয়ায় সার্বিক বন্যা পরিস্থিতির কিছুটা উন্নতি হলেও যমুনা-ব্রহ্মপুত্রের স্রোতের তীব্রতা বৃদ্ধি পাওয়ায় এক সপ্তাহে ফুলছড়ি উপজেলার বিভিন্ন এলাকায় ভাঙন অব্যাহত রয়েছে। এদিকে অমাবস্যা জোয়ারের প্রভাবে বরগুনার বিভিন্ন এলাকার বেড়িবাঁধ ভেঙে অন্তত ২০টি গ্রাম প্লাবিত হয়েছে। অপরদিকে নীলফামারীতে বন্যা পরিস্থিতি অবনতি হয়েছে। প্রতিনিধিদের পাঠানো খবর :
গাইবান্ধা : গাইবান্ধায় যমুনা, তিস্তা, করতোয়া ও ঘাঘট নদ-নদীর পানি কমে যাওয়ায় সার্বিক বন্যা পরিস্থিতির কিছুটা উন্নতি হলেও যমুনা-ব্রহ্মপুত্রের স্রোতের তীব্রতা বৃদ্ধি পাওয়ায় এক সপ্তাহে ফুলছড়ি উপজেলার বিভিন্ন এলাকায় ভাঙন অব্যাহত রয়েছে। ইতোমধ্যে ভাঙনে গজারিয়ার ঈদগাঁহ মাঠ, কামারপাড়া, রসুলপুর, পূর্ব কঞ্চিপাড়া ও সিংড়িয়া গ্রামের তিন শতাধিক পরিবারের বসতভিটা নদীতে বিলীন হয়েছে। ফলে এসব এলাকার গৃহহীন পরিবারগুলো সহায়-সম্বল হারিয়ে এখন খোলা আকাশের নিচে মানবেতর জীবনযাপন করছে।
সরেজমিন গিয়ে দেখা গেছে, ফজলুপুর ইউনিয়নের চন্দনস্বর, উত্তর খাটিয়ামারী, পূর্ব খাটিয়ামারী, পশ্চিম খাটিয়ামারী, কুচখালী, কাউয়াবাঁধা উদাখালী ইউনিয়নের সিংড়িয়া, উড়িয়ার রতনপুর, কালাসোনা, গজারিয়া ইউনিয়নের কামারপাড়া, জিয়াডাঙ্গা, কঞ্চিপাড়ার রসুলপুর, পূর্ব কঞ্চিপাড়া, জোড়াবাড়ি, সাঁতারকান্দি, ফজলুপুর ইউনিয়নের নিশ্চিন্তপুর ও খাটিয়ামারী গ্রামে নদী ভাঙন অব্যাহত রয়েছে। এছাড়া ফুলছড়ি সিনিয়র মাদ্রাসা, ফুলছড়ি ডিগ্রি কলেজ, ফুলছড়ি সিনিয়র আলিম মাদ্রাসা, মন্দিরসহ আরো ৩ শতাধিক বসতবাড়ি হুমকির মুখে রয়েছে। ফলে ঘরবাড়ি হারানোর আশঙ্কায় ফুলছড়ির পূর্ব কঞ্চিপাড়া, সিংড়িয়া, কাতলামারী, জিয়াডাঙ্গা, গলনা, কামারপাড়া, রসুলপুর, কালাসোনা, গাবগাছি, খাটিয়ামারি, নিশ্চিন্তপুর গ্রামের কয়েক শতাধিক মানুষ নির্ঘুম রাত কাটাচ্ছেন। ফুলছড়ি-বরমতাইর সড়কটি হুমকির মুখে থাকায় নদীপাড়ের মানুষজন আতঙ্কে বসবাস করছেন। অনেকেই ঘরবাড়ি নিরাপদ স্থানে সরিয়ে নিতে ব্যস্ত হয়ে পড়েছেন।
ফুলছড়ি উপজেলার কামারপাড়া গ্রামের বাসিন্দা শম্ভুনাথ কর্মকার জানান, ১৫ দিন আগে ভাঙন শুরু হয়েছে। ভাঙনে ইতোমধ্যে শতাধিক একর ফসলি জমি এবং অর্ধশতাধিক ঘরবাড়ি বিলীন হয়েছে। গৃহহারা পরিবারের লোকজন এখন মানবেতর জীবনযাপন করছে। ফুলছড়ি বাজারের ব্যবসায়ী মনা রায় জানান, পানি উন্নয়ন বোর্ড তড়িৎ গতিতে ফুলছড়ি-বরমতাইর সড়ক ও সিংডিয়ার বন্যা নিয়ন্ত্রণ বাঁধ মেরামত না করলে এবারো ৩ গ্রামের সহস্রাধিক পরিবার ভাঙনের কবলে পড়ার আশঙ্কা রয়েছে। এরমধ্যে ভাঙনে বন্যানিয়ন্ত্রণ বাঁধের ১০০ মিটার এলাকা বিলীন হয়ে গেছে। বন্যা নিয়ন্ত্রণ বাঁধে আশ্রয় নেয়া জরিনা বেওয়া জানান, তারা বসতবাড়ি হারিয়ে পরিবার নিয়ে খোলা আকাশের নিয়ে বসবাস করছেন। কিন্তু এখনো সরকারি কোনো সাহায্য পাননি। গজারিয়া ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মনোতোষ রায় মিন্টু জানান, ১০ বছর ধরে তার ইউনিয়নের বিভিন্ন এলাকা ভাঙছে। এ পর্যন্ত প্রায় ৫০০ বসতবাড়ি, শিক্ষা প্রতিষ্ঠান, ঈদগাঁহ মাঠ, মসজিদ ও মন্দির নদীতে বিলীন হয়েছে। সহস্রাধিক একর ফসলি জমি নষ্ট হয়েছে। কিন্তু ভাঙন প্রতিরোধে কার্যকর কোনো পদক্ষেপ নেয়া হয়নি।
পানি উন্নয়ন বোর্ডের গাইবান্ধার নির্বাহী প্রকৌশলী আব্দুল আউয়াল জানান, ফুলছড়ির উপজেলার সিংড়িয়া বন্যা নিয়ন্ত্রণ বাঁধের ভাঙন ঠেকাতে ৫ কোটি এবং কামারপাড়া এলাকার জন্য ৯০ লাখ টাকা বরাদ্দ পাওয়া গেছে। ভাঙন প্রতিরোধে সিংড়িয়া, গণকবর, কামারপাড়া ও গোবিন্দসহ বেশ কিছু এলাকায় জিওব্যাগ ফেলানোর কাজ শুরু হয়েছে। ফুলছড়ির উপজেলার ভাঙনের মুখে পড়া অন্য এলাকাগুলো নজরদারিতে রয়েছে। এসব এলাকার ভাঙন ঠেকাতে দ্রুত সিদ্ধান্ত গ্রহণ করা হবে। ফুলছড়ি উপজেলার দায়িত্বপ্রাপ্ত (অতিরিক্ত) নির্বাহী কর্মকর্তা আবদুল আউয়াল জানান, সরকারের পক্ষ থেকে ফুলছড়ি ও সাঘাটা উপজেলার বন্যাকবলিত মানুষদের মাঝে ত্রাণ বিতরণ অব্যাহত রয়েছে। তবে, পরিমাণ কম বেশিরভাগ মানুষ ত্রাণ পায়নি।
অপরদিকে তিস্তা ও ব্রহ্মপুত্র নদীর তীরবর্তী সুন্দরগঞ্জ উপজেলার হরিপুরসহ ৬ ইউনিয়নের নিজামখাঁ, খোঁদ্দারচর, চরচরিতাবাড়ি, কানিচরিতাবাড়ি, রিয়াজ মিয়ারচর, উজান বুড়াইল, ভাটি বুড়াইল, কেরানির চর, কালাইসোতার চর, চর বিরহীম, ভোরের পাখি ও কালিরখামার চর এলাকায় ভাঙন অব্যাহত রয়েছে।
বরগুনা : অমাবস্যা জোয়ারের প্রভাবে বরগুনার বুড়িশ্বর, বলেশ্বর ও বিষখালী নদীর পানি বৃদ্ধি পেয়ে বিভিন্ন এলাকার বেড়িবাঁধ ভেঙে গেছে। ফলে প্লাবিত হয়েছে প্রায় ২০ গ্রাম। জোয়ারের পানিতে ভাসছে আর ভাটায় শুকাচ্ছে এসব গ্রামের কয়েক হাজার মানুষ। লবণ পানিতে ফসলের ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে। হঠাৎ করেই অমাবস্যা জোয়ারের প্রভাবে পানির চাপ বৃদ্ধি পায়। পানির চাপে জেলার পাথরঘাটার পদ্মা, রুহিতা ও জি্বনতলার বেড়িবাঁধ ভেঙে য়ায়। ফলে পদ্মা, রুহিতা, জি্বনতলা, বাদুরতলা, কোরালিয়া, নিজ লাঠিমারা, ছোট টেংরা, গাববাড়িয়াসহ ১০টি গ্রাম প্লাবিত হয়। এদিকে বেতাগী উপজেলায় বেড়িবাঁধ না থাকায় ঝোপখালী, ভোলানাথপুর, জগাইখালী, কালিকাবাড়ী, গাবতলী, আলিয়াবাদ, জোয়ার করুনা, গ্রেমর্দন এলাকা জোয়ারের পানিতে তলিয়ে যায়। এছাড়া বেড়িবাঁধের বাইরে নিম্নাঞ্চল তালতলীর খোটটার চর, নলবুনিয়ার চর, আশার চর, তেঁতুলবাড়িয়ারচর জোয়ারের পানিতে তলিয়ে গেছে। পানিতে লবণ থাকায় বেশ কিছু এলাকার ক্ষেতের ফসল নষ্ট হচ্ছে। মাছের ঘের তলিয়ে ভেসে গেছে লাখ লাখ টাকার মাছ।
বরগুনা পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী এসএম শহিদুল ইসলাম জানান, জোয়ারে পানির চাপ বেশি থাকায় পাথরঘাটার পদ্মা, রুহীতা এলকার বেড়িবাঁধ ভেঙে গেছে। ইতিমধ্যে পদ্মা, রুহীতা, জ্বীনতলার বেড়িবাধ সংস্কার করার জন্য ঠিকাদার নিয়োগ করা হয়েছে। দুই-চার দিনের মধ্যেই কাজ শুরু হবে।
বরগুনা জেলা প্রশাসক মীর জহুরুল ইসলাম বলেন, পাথরঘাটার পদ্মা গ্রামের ভাঙনকবলিত এলাকা তিনি পরিদর্শন করেছেন। তাৎক্ষণিক ৮০টি ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারকে ১ কেজি চিড়া, ১ কেজি চিনি ও ১ কেজি মুড়ি দেয়া হয়েছে। এছাড়া ক্ষতিগ্রস্তদের জন্য জিআরের চাল বরাদ্দ দেয়া হয়েছে। বেড়িবাঁধের স্থায়ী সমাধানের জন্য পানি উন্নয়ন বোর্ডের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের চিঠি পাঠানো হয়েছে।
নীলফামারী : তিস্তা অববাহিকার বন্যা পরিস্থিতি অব্যাহত রয়েছে। উজানের ঢল কিছুটা কমে যাওয়ায় শনিবার দুপুর ১২টার দিকে তিস্তার পানি ডালিয়া পয়েন্টে বিপদসীমার (৫২ দশমিক ৪০) ১ সেন্টিমিটার নিচ দিয়ে প্রবাহিত হয়েছে। যা গত শুক্রবার থেকে বিপদসীমার ১৫ সেন্টিমিটার উপর দিয়ে প্রবাহিত হয়। ডালিয়া পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী মোস্তাফিজুর রহমান জানান, উজানের ঢল কিছুটা কমলেও তিস্তা নদীর বন্যা পরিস্থিতি অব্যাহত থাকায় তিস্তা ব্যারাজের ৪৪টি গেট খুলে রাখা হয়েছে। এদিকে বন্যা পরিস্থিতি অব্যাহত থাকার কারণে ডিমলা উপজেলার পূর্বছাতনাই, খগাখড়িবাড়ি, টেপাখড়িবাড়ি, খালিশাচাঁপানী, ঝুনাগাছচাঁপানী, গয়াবাড়ি এবং জলঢাকা উপজেলার, গোলমু-া, ডাউয়াবাড়ি, শৌলমারী ও কৈমারী ইউনিয়নের বিস্তীর্ণ এলাকার ২৫টি চর ও গ্রামের ১০ হাজার পরিবার বন্যাকবলিত হয়ে পড়েছেন।#


source : abna
0
0% (نفر 0)
 
نظر شما در مورد این مطلب ؟
 
امتیاز شما به این مطلب ؟
اشتراک گذاری در شبکه های اجتماعی:

latest article

ইমাম মাহদী (আ.)-এর জীবনের ...
এবার গরুর প্রতি নিষ্ঠুরতার দায়ে ...
ধৈর্য ও সহনশীলতা
শেইখ যাকযাকির মুক্তির দাবীতে ...
‘মার্কিন অস্ত্র দিয়ে হত্যা করা ...
দৃষ্টিহীনদের জন্য স্মার্ট ...
সর্বোচ্চ নেতার সঙ্গে বাশার ...
হোসাইনি দালানে আয়াতুল্লাহ ...
তিউনিশিয়ার আন্তর্জাতিক ...
রোহিঙ্গা ইস্যুতে মিয়ানমারের ...

 
user comment