বাঙ্গালী
Wednesday 24th of April 2024
0
نفر 0

হুসাইনকে (আ.) দমন করা ওয়াজিব: দরবারি আলেমের ফতোয়া

হুসাইনকে (আ.) দমন করা ওয়াজিব: দরবারি আলেমের ফতোয়া

১৩৭৪ বছর আগে ৬১ হিজরির এই দিনে (চতুর্থ মহররম) কুফায় নিযুক্ত ইয়াজিদের নরপিচাশ গভর্নর ইবনে জিয়াদ ‘শুরাইহ কাজি’ নামক দরবারি আলেমের কাছ থেকে নেয়া ফতোয়ার ভিত্তিতে হযরত ইমাম হুসাইন (আ.)-কে হত্যার জন্য জনগণকে উস্কানি দিয়েছে। কুফার মসজিদে ইবনে জিয়াদ ওই ফতোয়া শুনিয়ে একদল মানুষকে ইমামের বিরুদ্ধে উত্তেজিত করে।


ইবনে জিয়াদের নির্দেশে তৈরি করা ওই ফতোয়ায় বলা হয়েছিল হযরত ইমাম হুসাইন (আ.) ততকালীন মুসলিম বিশ্বের তথাকথিত খলিফা ও আমিরুল মুমিনিন ইয়াজিদের আনুগত্য করেননি তাই তাকে দমন করা মুসলমানদের জন্য ওয়াজিব।


কুফার ১৩ হাজার বিভ্রান্ত মুসলমান ইমাম হুসাইন (আ.)’র বিরুদ্ধে যুদ্ধের জন্য ওমর সাদের সেনাবাহিনীতে যোগ দেয়। এদের মধ্যে শিমার বিন জিল জুশান ছিল ওই ১৩ হাজার সেনার চার জন গ্রুপ-লিডারের অন্যতম।


হযরত ইমাম হুসাইন (আ.)’র নেতৃত্বে কারবালার মহাবিপ্লব খোদাদ্রোহী ও মুনাফিক চরিত্রের অধিকারী উমাইয়া শাসকদের স্বরূপ উন্মোচন করেছিল। ইসলামের নামে ধর্মান্ধতা ও রাষ্ট্রীয় সন্ত্রাসবাদ চালু করেছিল ইয়াজিদি শাসক গোষ্ঠী। উমাইয়াদের রাজতান্ত্রিক ইসলামে বসেছিল দরবারি আলেমদের মেলা। লাখ লাখ জাল হাদিস প্রচার করে ইসলাম সম্পর্কে ধুম্রজাল ও বিভ্রান্তি জোরদার করা হয়েছিল সে সময়। ইসলামের খাঁটি নেতাদের বিরুদ্ধে বিষোদগার করা ও ভন্ড প্রকৃতির নেতাদের মাহাত্ম্য প্রচার করা ছিল তাদের স্বভাব।


উমাইয়া রাজশক্তি পক্ষ থেকে ইমাম হুসাইন (আ.) ও তাঁর মহান সঙ্গীদেরকে ‘ইসলামী হুকুমাতের’ বিরুদ্ধে বিদ্রোহী বলে প্রচার করা হয়েছিল। তাই ঐতিহাসিক বর্ণনায় দেখা গেছে, হযরত ইমাম হুসাইন (আ.)-কে হত্যার জন্য উদ্যত সেনাদের মধ্যে কেউ কেউ ছিল নামাজি। তারা বলছিল: তাড়াতাড়ি হুসাইনের মাথা কাট, নামাজ বা জামায়াতে নামাজ আদায়ের সময় পার হয়ে যাচ্ছে!


এরা একবারও হয়তো চিন্তা করেনি যে, রাসূল (সা.)’র আহলে বাইতের একজন মহান সদস্যকে তারা হত্যা করতে এসেছে! আর আহলে বাইত (আ.)’র ওপর দরুদ পেশ করা ছাড়া নামাজ আদায় হয় না।


উল্লেখ্য জাহেলি যুগেও আরব মুশরিক ও কাফিররা পবিত্র মহররম মাসে যুদ্ধ-বিগ্রহ করত না। কিন্তু উমাইয়া শাসনামলে মুসলমান নামধারী শাসকরা এতটাই হীন ও নীচ হয়ে পড়েছিল যে তারা রাসূলের(সা.) নাতি ও তাঁর পরিবারকে এই নিষিদ্ধ বা পবিত্র মাসেই নৃশংসভাবে শহীদ করতে কুণ্ঠিত হয়নি।

বাংলার জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলাম সে যুগের উমাইয়া শাসকদের প্রকৃতি তুলে ধরেছিলেন এভাবে:



ওরে বাংলার মুসলিম তোরা কাঁদ্।..
তখতের লোভে এসেছে এজিদ কমবখতের বেশে !

এসেছে সীমার, এসেছে কুফা'র বিশ্বসঘাতকতা,
ত্যাগের ধর্মে এসেছে লোভের প্রবল নির্মমতা !

মুসলিমে মুসলিমে আনিয়াছে বিদ্বেষের বিষাদ,
...কাঁদে আসমান জমিন, কাঁদিছে মোহররমের চাঁদ।

একদিকে মাতা ফাতেমার বীর দুলাল হোসেনী সেনা,
আর দিকে যত তখত-বিলাসী লোভী এজিদের কেনা।..

এই ধুর্ত্ত ও ভোগীরাই তলোয়ারে বেঁধে কোরআন,
আলী'র সেনারে করেছে সদাই বিব্রত পেরেশান !

এই এজিদের সেনাদল শয়তানের প্ররোচনায়
হাসানে হোসেনে গালি দিতে যেত মক্কা ও মদিনায়।.. #

0
0% (نفر 0)
 
نظر شما در مورد این مطلب ؟
 
امتیاز شما به این مطلب ؟
اشتراک گذاری در شبکه های اجتماعی:

latest article

ইমাম মাহদী (আ. ফা.) এর সংক্ষিপ্ত ...
শেইখ মুফিদ (রহ.)-এর ভুল ফতওয়া এবং ...
দৃষ্টি সংযত করার ২০ টি উপায়
পবিত্র কোরআন ও হাদীসের আলোকে ইমাম ...
১৫ই শাবান রাত ও দিনের আমল
ইমাম মাহ্দী (আ.)-এর ‘আবির্ভাব-পূর্ব ...
ইমাম মাহদী (আ.)-এর জীবনের ...
১৫ই শাবান: শেকল ভাঙার মহানায়কের ...
ইমাম মাহদি (আ.)'র ...
শবে বরাত

 
user comment